0

মাকড়সাদের জগতে অনেক অদ্ভুত কিছু রীতিনীতি প্রচলিত। এর মাঝে আরও অদ্ভুত হলো কয়েন স্পাইডার, যে প্রজাতির পুরুষেরা মিলনের পর নিজেই নিজের স্পার্ম স্যাক কেটে ফেলে।নেচে নেচে নিজের সঙ্গিনীকে আকৃষ্ট করা, সঙ্গীকে পছন্দ না হলে খেয়ে ফেলা- এ ধরণের অদ্ভুত সব কীর্তি মাকড়সাদের মাঝেই দেখা যায়। 

এখন আবার দেখা যাচ্ছে নিজেই নিজের যৌনাঙ্গ কেটে ফেলে পুরুষেরা। কিন্তু এর কারণটা কি? স্লোভেনিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স অ্যান্ড আর্টস এর গবেষণা অনুযায়ী, এর মাধ্যমে তারা বডিগার্ডের ভূমিকা ভালোভাবে পালন করতে পারে। শুনতে বেখাপ্পা লাগতে পারে বটে। কিন্তু মনোগাইনাস বা বাইগাইনাস মাকড়সা প্রজাতিদের মাঝে এ ব্যাপারটি বেশ সাধারণ। এক্ষেত্রে পুরুষটি সারা জীবনে মাত্র এক বা দুই নারীর সাথে মিলিত হতে পারে, কিন্তু নারীর থাকতে পারে অনেক পুরুষ সঙ্গী।

অনেক প্রজাতির মাকড়সা মিলনের সময়ে বা পর পরই নিজের স্পার্ম ট্রান্সফারিং অর্গান (পাল্প) কেটে ফেলার ফলে নারীর শরীরে তা আটকে যায়, ফলে সে অন্য পুরুষের সাথে মিলিত হবার সুযোগ পায় না। একটি পাল্প কেটে ফেললে পুরুষটি হাফ-ইউনাকে রূপান্তরিত হয়, যার অর্থ ভবিষ্যতেও সে মিলিত হবার সুযোগ পেতে পারে। কিন্তু দুইটি পাল্প কেটে ফেললে সে পুরোপুরি স্টেরাইল হয়ে যায়। এভাবে নিজেকে মিলনে অক্ষম করে ফেলার আরও একটি সুবিধা রয়েছে। ওজনদার স্পার্ম স্যাক কেটে ফেললে তার শরীর অনেক হালকা হয়ে যায়। এর ফলে অন্য পুরুষ মাকড়সার সাথে লড়াইয়ের শক্তি বৃদ্ধি পায় তার।

এ তো গেলো মিলনের সময়ে নিজের স্পার্ম স্যাক কেটে ফেলে নারীকে অন্যের সাথে মিলিত হবার সুযোগ না দেবার ব্যাপারটি। কিন্তু মিলনের পরে যেসব মাকড়সা নিজেকে অক্ষম করে ফেলে, তাদের এ কাজটির পেছনে কারণ কি? এ ব্যাপারটি জানতে গবেষকেরা কয়েক স্পাইডারের প্রজাতির দিকে লক্ষ্য করেন। তাদের যৌন জীবন বেশ দুর্যোগপূর্ণ। নারীর শরীর পুরুষের তুলোনায় চারগুণ বড়। আর মিলনের পর নারী অনেক সময়েই পুরুষটিকে ধরে খেয়ে ফেলে। এদের ওপরে গবেষণা করে দেখা যায়, যারা এভাবে নিজের যৌনাঙ্গ কেটে ফেলে তারা অন্য পুরুষ মাকড়সার চাইতে বেশী সক্রিয় এবং বডিগার্ডের মতোই নারীটির আশেপাশে থাকে সবসময়। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের বংশগতি টিকে থাকার ব্যাপারটি নিশ্চিত করে বলে ব্যাখ্যা করেন গবেষকেরা।

(মূল: Justine Alford, IFLScience)

Post a Comment

 
Top