0
অন্ধকার রাস্তা, নির্জন, একা একা একজন মানুষ হাঁটছেন। কোথাও থেকে উড়ে এলো কালো আলখেল্লা পরা রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার। ঘাড়ে সূচালো দাঁত ফুটিয়ে রক্ত চুষে আবার হাওয়া হয়ে গেল অন্ধকারে। ভ্যাম্পায়ারের সিনেমায় এইধরনের দৃশ্য আমরা অনেক দেখেছি। এবং আমরা জানি যে এই রক্তচোষা প্রাণীটি বাস্তবে নেই। কিন্তু সত্যিই কি নেই?

রক্তচোষা বাদুড়ের কথা শুনেছেন? এই বাদুড়ের কর্মকাণ্ড ঠিক এই ভ্যাম্পায়ারের মতো। সেকারণে এই রক্তচোষা বাদুড়কে বাস্তবের ভ্যাম্পায়ার হিসেবেই আখ্যায়িত করা হয়। ইংরেজিতে এদের বলা হয়- ভ্যাম্পায়ার ব্যাট। এরা থাকে সম্পূর্ণ অন্ধকার স্থান যেমন- গুহা, পরিত্যক্ত কুয়া, ফাঁপা গাছের গুড়ি কিংবা পুরাতন পোড়ো বাড়িতে ঠিক সিনেমার ভ্যাম্পায়ারদের মতো। তবে এদের পুরো পৃথিবীতে দেখতে পাওয়া যায় না। এরা মূলত মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার বনাঞ্চলের প্রাণী।

এই বাদুড়গুলো রক্তপান করেই বেঁচে থাকে।এরা মানুষের রক্ত পান করলেও, মানুষই এদের প্রধান শিকার নয়। এদের প্রধান শিকার গরু, ঘোড়া, এবং অন্যান্য গবাদি পশু। এদের ওপরের চোয়ালের সামনের সারিতে যে দুটি-দুটি দাঁত অর্থাৎ ছেদক দাঁত রয়েছে তা অনেকগুণ বেশি তীক্ষ্ম। বাদুড়গুলো এ দাঁতের সাহায্যে শিকারের শরীরে ক্ষত তৈরি করে। আর এ ক্ষত থেকে বের হওয়া রক্তপান করে বেঁচে থাকে। তবে শিকারের শরীর থেকে বের হওয়া এ রক্ত যাতে কোনো ব্যাঘাত ছাড়া পান করতে পারে সেকারণে বাদুড়টি তার মুখ থেকে বিশেষ এক ধরনের লালা নিঃসরণ করে। এ লালা রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না। ফলে বাদুড়টি খুব দ্রুত ও নিজের সুবিধামতো রক্তপান করতে পারে। এই বাদুড় যখন কোনো প্রাণীর শরীরে দাঁত বসায়, সে তখন কিছুই টের পায় না। কোনো ধরণের ব্যথাও অনুভব করে না। কারণ এদের মুখ থেকে নিঃসৃত লালা সেই স্থানটি অবশ করে ফেলে। এরা মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীর শরীর থেকে যে রক্ত পান করে, তারপরিমাণও খুবই সামান্য। এর ফলে মৃত্যুর সম্ভাবনা নেই।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে স্থানে বাদুড়ের মুখ থেকে নিঃসৃত লালা থাকে সেস্থানে রক্ত জমাট বাঁধতেই পারে না। রক্তপাত ঘটতেই। ছোটোখাটো কোনো প্রাণীর দেহে এমন ক্ষতের সৃষ্টি হলে শুধুমাত্র অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণেই প্রাণীটির মৃত্যু হয়। এমনকি সঠিক চিকিৎসায় রক্তপাত বন্ধ না করা গেলে মানুষও মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকেন।

তথ্যঃ উইকিপিডিয়া, ছবিঃ ইন্টারনেট

Post a Comment

 
Top